রমজান মাসে স্ত্রী সহ-বা.সে বাধা নেই, তবে মানতে হবে যে বিধান

 


সংযমের মাস হিসেবে বিশেষ আলাদা পরিচিতি আছে পবিত্র রমজান মাসের। এই মাসে ইবাগত-বন্দেগীতে বেশি সময় পার করতে বলা হয়েছে। রমজান মাস নিয়ে একটু সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি। কিন্তু এর মানে এই নয় যে, আপনি গোঁড়ামি করবেন। শরীয়তের বিধান মেনে ইবাদত-বন্দেগী করা জরুরি।


অনেকেই রমজান মাসে স্ত্রী সহবাস নিষিদ্ধ ভেবে থাকেন। বিষয়টা আসলে অজ্ঞতার কারণে নিষিদ্ধ মনে করেন অনেকে। রমজানে স্ত্রী সহবাস করা যায়, কিন্তু সেটা নিয়ম মেনে। এখন প্রশ্ন উঠতে পারে- কী সেই নিয়ম? রমজানে সহবাস সম্পর্কে সূরা আল-বাকারা’র ১৮৭ নং আয়াতে সরাসরি বলা হয়, ‘রমজান মাসের রাতে তোমাদের স্ত্রী সহবাস করা তোমাদের জন্য হালাল করা হয়েছে।’ এই আয়াত থেকে এটা প্রমাণিত হয়, রোজাদারের জন্য দিনের বেলা সহবাস হালাল করা হয়নি।


অর্থাৎ রোজা রেখে দিনের বেলা খাদ্য-পানীয় খাওয়ার মতো স্ত্রী সহবাসও নিষিদ্ধ। কিন্তু ইফতারির সময় থেকে সেহরির শেষ সময়ের আগ পর্যন্ত পানাহার যেমন বৈধ, তেমন স্ত্রী সহবাসও বৈধ।


আসুন সূরা বাকারার ১৮৭ নং আয়াতের পরিপূর্ণ বাংলা অর্থটা জেনে নিই- ‘সিয়ামের রাতে তোমাদের জন্যে তোমাদের স্ত্রীদের বৈধ করা হয়েছে। তারা তোমাদের জন্যে এবং তোমরাও তাদের জন্যে পরিচ্ছদ। আল্লাহ জেনেছেন যে, তোমরা তোমাদের নিজেদের সঙ্গে খিয়ানত করছিলে, অতঃপর তিনি তোমাদের তওবা কবুল করেছেন এবং তোমাদেরকে মার্জনা করেছেন, সুতরাং এখন তোমরা তাদের সঙ্গে সংগত হও এবং আল্লাহ তোমাদের জন্যে যা নির্ধারণ করে রেখেছেন (অর্থাৎ সন্তান) তা অন্বেষণ করো। আর তোমরা আহার করো ও পান করো যতক্ষণ তোমাদের জন্যে (রাত্রির) কালো রেখা থেকে ফজরের সাদা রেখা স্পষ্ট হয়ে যায়। এরপর রাত পর্যন্ত সিয়াম পূর্ণ করো। আর তোমরা মসজিদে ইতিকাফ অবস্থায় তাদের সঙ্গে সংগত হয়ো না। এগুলো আল্লাহর (নির্ধারিত) সীমা, সুতরাং এর নিকটবর্তী হইও না। এভাবেই আল্লাহ মানুষের জন্যে তার আয়াতসমূহ স্পষ্টভাবে বর্ণনা করেন, যাতে তারা তাকওয়া বা আল্লাহভীরুতা অবলম্বন করতে পারে।’


রাতের বেলা স্ত্রী সহবাস সম্পূর্ণ বৈধ। কিন্তু কোনো স্বামী যদি জোর করে দিনের বেলায় স্ত্রীর সঙ্গে যৌ*নসম্পর্ক করেন, সেক্ষেত্রে স্বামীর রোজা ভাঙলেও স্ত্রীর ভাঙবে না। আর শরিয়তে সহ*বাস বলতে পুরুষাঙ্গের সঙ্গে স্ত্রী-অঙ্গের মিলন বোঝায়। এখানে বী-র্যপা-ত শর্ত নয়। এই দুই অঙ্গ সংস্পর্শে আসলেই রোজা ভেঙ্গে যাবে। এমনকি বী-র্যপা-ত না ঘটলেও।


এটা মনে রাখা জরুরি- যৌ*ন মিলনের দ্বারা কেউ রোজা ভাঙলে সেটি পরবর্তীতে কাযা করতে হবে এবং কাফফারাও দিতে হবে। তবে স্বামী-স্ত্রীর মাঝে শারীরিক স্পর্শ বা শুধু চুমুর কারণে রোজা ভাঙবে না। কিন্তু এর ফলে যদি বীর্যপাত ঘটে, সেক্ষেত্রে রোজা ভেঙ্গে যাবে। তাই রোজার সময় এগুলো পরিহার করাই উত্তম।

Post a Comment

Previous Post Next Post